প্রকাশিত: Sun, Feb 11, 2024 1:17 AM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 2:58 AM

[১]সংসদ নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে দেশের গণতন্ত্র কেড়ে নেয়া হত: প্রধানমন্ত্রী [২]দলের তৃণমূলে আর বিবাদ নয়

সালেহ্ বিপ্লব: [৩] আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দলের সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে শুধু নির্বাচন কলঙ্কিত হতো। আমার দলের  লোকদের জন্য নির্বাচন না হলে, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মর্যাদা নষ্ট হয়ে যেত।

[৪] প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ কথা বলেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর এটি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় বর্ধিত সভা। জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের নেতারা এই সভায় অংশ নিয়েছেন। ছিলেন দলীয় সংসদ সদস্যরা, পাশাপাশি দলের সমর্থক স্বতন্ত্র এমপিরাও। 

[৫] [নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেওয়ায় দলে অনেক মন কষাকষি হয়েছে। যেটা হয়েছে ভুলে যেতে হবে। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। যদি সমস্যা দেখা দেয়, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি আছি। দেখবো। নিজেরা সংঘাত করা যাবে না। 

[৬] তিনি  বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র ছিলো। তার অংশ হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। বিদেশী প্রভুদের নিয়ে তারা আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে চেয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়েও নির্বাচন ঠেকানো যায়। সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নির্বাচন করেছি। নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছি, যাতে প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হয়। অনেক দেশ বলে, নির্বাচনে নাকি সমস্যা ছিলো। আমার কথা হলো, কীভাবে কোথায় সমস্যা, সেটা বলতে হবে। পৃথিবীর বহু দেশে নির্বাচন হয়েছে। অনেক দেশে এখনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অনেক প্রাণহানি হয়েছে। সেসব কিছু বাংলাদেশে হয়নি। অভিযোগ করলে, প্রমাণ দিতে হবে। 

[৭] তিনি বলেন, স্যাংশনের ভয় দেখাতে আমি নিষেধ করেছি। আগেই বলে দিয়েছি, স্যাংশন আমরাও দিতে পারি। স্যাংশনের নিয়মকানুন আমিও জানি। 

[৮] শেখ হাসিনা বলেন, সামনে উপজেলা নির্বাচন। দলের সকল লোকের জন্য নির্বাচনটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। উপজেলাসহ আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে কোনো ধরনের সংঘর্ষের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা কোনো ধরনের সংঘর্ষ চাই না। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে- সে যেই  হোক না কেন। 

[৯] শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছর বাজেট প্রণয়নের সময় আমরা নির্বাচনী ইশতেহার অনুসরণ করি। এই অর্জন ধরে রাখতে আমরা নির্বাচনের আগে যে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম, তা আমরা ভুলে গেছি, এমন কথা বলবেন না।

[১০] শেখ হাসিনা বক্তব্যের শুরুতে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। তিনি সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৩ বছর ৭ মাস। এই সময়েই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দেশে আর কোনো উন্নয়ন হয়নি।  

[১১] তিনি বলেন, ২১ বছর একনায়করা দেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনেছে। এরপর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নে নিয়োজিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। 

[১২] প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো একটা দল টানা চারবার ক্ষমতায় আসা, সহজ কথা না। আমরা উন্নয়ন করেছি। তৃণমূলে উন্নয়ন করেছি। যার ফলে জনগণের আস্থা ও বিশ^াস আমরা অর্জন করতে পেরেছি। এবারও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করে মানুষের সেই আস্থার মূল্য আমরা দেবো।   


[১] নারীদের বিজ্ঞানে ক্যারিয়ার গড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করলেন প্রধানমন্ত্রী

সালেহ্ বিপ্লব: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ও মেয়েদের একটি ন্যায়পরায়ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান ক্ষেত্রে  আরও বেশি অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। বাসস

[২.১] তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই তরুণ নারীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার বেছে নেওয়ার জন্য সঠিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।

[২.২] শনিবার নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান সমাবেশের নবম আন্তর্জাতিক নারী ও বালিকা দিবসে সম্প্রচারিত এক ভিডিও বিব"তিতে তিনি এ কথা বলেন। বাসস

[৩] প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানে নারীদের নেতৃত্বের পদে উন্নীত করা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আমি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের নারী বিজ্ঞানীদের কাজকে স্বীকৃতি ও প্রণোদনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

[৪] প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে অংশ নেওয়া সকলকে শুভে"ছা জানিয়ে বলেন, আমাদের বিশ^ যে চ্যালেঞ্জগুলোর  মুখোমুখি তার সমাধান খোঁজায় গবেষণা ও উদ্ভাবনে নিয়োজিত সকল নারীকে আমি অভিনন্দন জানাই। বিজ্ঞানে আমাদের আরও বেশি নারী ও মেয়েদের প্রয়োজন।

[৫] শেখ হাসিনা আরো বলেন, সরকার সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার নারী ও মেয়েকে ডিজিটালভাবে মতায়ন করছে। ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে তাদের প্রাণবন্ত উপ¯ি'তি দেখে আমি আনন্দিত বোধ করি। আমরা তরুণ নারীদের আইটি ফি"ল্যান্সার হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিণের ব্যব¯'া করেছি। আমরা ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রতিবন্ধী তরুণীদের জীবনে পরিবর্তন সাধন করতে চাই।

[৬] শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার নারীদের কাজের ভবিষ্যত তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য কারিগরি ও ব"ত্তিমূলক শিার প্রসার ঘটা"েছ। আমরা সকল উ"চ বিদ্যালয়ের শিার্থীদের জন্য বিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ে শিা নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছি।

[৭] প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, অতীতে উ"চ শিায় বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেয়ে শিার্থীর সংখ্যা সন্তোষজনক ছিল না। তবে বর্তমানে আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিজ্ঞান শিায় নারীদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে ব"দ্ধি পেয়েছে।

[৭.১] তিনি বলেন, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোট শিার্থীর প্রায় ৪০ শতাংশ নারী- যেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের শতকরা হার ৩০ শতাংশ।

[৮] প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার গবেষণা এবং উদ্ভাবনী খাতে যে অনুদান প্রদান করে, তাতে নারীরা যেন অগ্রাধিকার পায়- তা নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ মেয়েদের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্র¯'ত হতে হবে। আমি সবসময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারী ও মেয়েদের শিার প্রতি নিবেদিত থাকব।